শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৭ অপরাহ্ন
দুলাল হোসেন- পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
দুঃখ-দুর্দশা যাদের নিত্য সঙ্গী সুখ যেন তাদের কাছে মরিচীকা বলছি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার অন্তর্ভূক্ত তেঁতুলিয়া নদী বেষ্টিত নবগঠিত ইউনিয়ন চন্দ্রদ্বীপ বাসীর কথা। এই দ্বীপের বয়স আনুমানিক প্রায় ১০০ বছরের বেশ হলেও লাগেনি উন্নয়নের আধুনিক ছোয়া যদিও বিদ্যুৎ সংযোগ হয়েছে। এখনে নেই কোনো ক্লিনিক বা সরকারী হাসপাতাল নেই কোনো ডাক্তার, নেই জরুরী পারপার হওয়ার কোনো ব্যবস্থা। এতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বাড়ছে গর্ভবতী, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট রোগীসহ সকল রোগীদের। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ দূর্ঘটনা ঘটলেও সময় ক্ষেপন ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা এ দ্বীপের মানুষদের।
জানা গেছে- উপজেলার নবগঠিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের জন্ম ২০১৩ইং সালে উপজেলার মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপের পারাপার হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে খেয়া। যেখানে দ্বীপটিতে জনসংখ্যা প্রায় ১৫০০০ হাজারেরও বেশি সেখানে নদী পার হওয়ার জন্য একটি মাত্র ঘাট এখানে।
এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে এ দ্বীপের মানুষদের। অন্যদিকে নদী ভাঙ্গনের কারণে ইউনিয়নের আয়তন দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই হত দরিদ্র মানুষের। বিচ্ছিন্ন এই ছোট দ্বীপে রয়েছে একটি হাইস্কুল ও একটি মাদ্রাসাসহ ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যথাযথ শিক্ষা ব্যবস্থা থাকলেও কোনোটাতেই নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষক। এতে ব্যাহত হচ্ছে চন্দ্রদ্বীপের শিক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু-কিশোর ও শিক্ষার্থীরা।
ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষই পেশায় জেলে ও শ্রমজীবী। এখানে শতভাগ লোকের আয়ের প্রধান উৎস নদীতে মাছ ধরা। আর কোনো কর্মসংস্থান না থাকায় বিশাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ। অন্যদিকে বর্ষার মৌসুমে বাউফল উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন এই ইউনিয়নের চার পাশে থাকা তেঁতুলিয়া নদীর রাক্ষুসে ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে যাচ্ছে ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিয়ারার কচুয়া, চরওয়াডেল, চরমিয়াজান ও চরব্যারেট গ্রাম।প্রতিনিয়তই বসতবাড়ী হারাচ্ছেন মানুষ। বর্ষার মৌসুমের আগেই অকাল ভাঙ্গনে হুমকির মুখে চন্দ্রদ্বীপ।
ইউনিয়নের বহু ঘরবাড়ী, মসজিদ মাদ্রাসা, সরকারি পাকা রাস্তা,প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই সর্বনাশা ভাঙ্গন রক্ষায় নদীর চারপাশে ব্লক সহ বেড়ী বাঁধের সকল ধরনের সুবিধা ও সরকারী অনুদান পাওয়ার দাবি জানান এই অবহেলিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগন। ওই ইউনিয়নের জনগণের একটাই কথা ‘ঝড় তুফানের নেইকো ভয় আল্লাহ্‘র উপর রাখি ভর।
স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুস বলেন- আল্লাহ্ যদি মোগো রাহে বাচমু আর না রাখলে মরমু, দুননৈতে আইছি পোড়া কহাল রইয়া কি করমু মাওলায় য্যা করে।
ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লা বলেন- ইউনিয়ন বাসীর নিরাপত্তার জন্য আল্লাহ’র ইচ্ছায় সকল প্রকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইউনিয়নের চারপাশে নদী থাকায় জোয়ারের পানিতে অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। ফলে অনেক জায়গায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। তবুও প্রাকৃতিক দূর্যোগে বাঁধ ভেঙ্গে ঘর বাড়ি তলিয়ে যায়। ইউনিয়নটিকে রক্ষার জন্য বেশি পরিমাণে সিসি ব্লক দিয়া বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।উপজেলা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এখানে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল জরুরী।